নিজস্ব প্রতিনিধি (লক্ষ্মীপুর) :
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় পারিবারিক কলহের জেরে ফাতেমা বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তার স্বামী রাজু (২৫) ও ভাশুর বাবলুকে (২৭) কে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ অক্টোবর) ভোরের দিকে উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের ০১ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদনগর গ্রামের ভিকটিম ফাতেমা বেগমের বাবার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ফাতেমা মোহাম্মদ নগর গ্রামের মৃত সাইফুল্লাহ মওলানার মেয়ে। তাদের সংসারে রুবি নামে চার বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
অভিযুক্ত রাজু একই ইউনিয়নের ০২ নং ওয়ার্ডের মাইজের বাড়ির মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে।
তিনি পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। তার আরও এক স্ত্রী রয়েছে।ফাতেমা তার প্রথম স্ত্রী।
ফাতেমার স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকে জন্য নির্যাতন করেই ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে। পূর্বেও তাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হতো।
ভোরে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ফাতেমার মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। এঘটনায় তার স্বামী রাজুকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ফাতেমার বড় বোন রাবেয়া আক্তার বলেন, পাঁচ বছর আগে আমার বোনের সঙ্গে রাজুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার বোনকে জ্বালাতন করতেন রাজু।
যৌতুক চাইতেন। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জমি বিক্রি করে তাকে বিদেশ পাঠানো হয়। এক মাসের মাথায় চলে এসে আবার আমার বোনকে নির্যাতন শুরু করে।
নিহত ফাতেমার বড় ভাই মো. আবদুল্লাহ বলেন, প্রায় ১৫ দিন থেকে আমার বোন ও তার স্বামী আমাদের বাড়িতে থাকছেন।
সোমবার ভোরে ঘরের পাশের একটি পুকুরে আমার বোনের মরদেহ পাওয়া যায়। ঘরে তারা দুইজন ও তাদের মেয়ে ছিল। আমার বোনকে তার স্বামীই হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেন। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতেন রাজু। পরে টাকা দিয়ে বিদেশ পাঠাই। এরপরেও সংসারে শান্তি ছিল না। কয়েক মাস আগে রাজু অন্যত্র বিয়ে করে। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি আরও বেড়ে।
স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য তাজ নাহার বেগম বলেন, ফামেতার মরদেহ বাড়ির পাশের পুকুরে পাওয়ার সংবাদ শুনে আমি তাদের বাড়িতে আসি।
হত্যার অভিযোগে তার স্বামী রাজুকে বাড়ির লোকজন গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
এদিকে ফাতেমার স্বামী অভিযুক্ত রাজু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, রাতে আমরা একসঙ্গে শ্বশুর বাড়িতে ছিলাম। ভোরে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে তিনি আর ঘরে আসেনি। কে বা কারা তাকে মেরেছে, আমি জানি না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা স্বপন বলেন, দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।