ফাইল ছবি
লাইফ স্টাইল ডেস্ক :
কিডনিতে পাথর জমা একটি বেদনাদায়ক সমস্যা। পাথর ছোট বা বড় যে কোনো আকারের হতে পারে এবং এতে প্রচণ্ড ব্যথা ও নানা শারীরিক অস্বস্তির সৃষ্টি হয়। এই পাথরগুলো সাধারণত ক্যালসিয়াম অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিড, স্ট্রুভাইট ও সিস্টাইন জাতীয় কঠিন বর্জ্য পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত।
কিডনিতে পাথর জমার সমস্যার পেছনে পানি কম পান করা, ডায়াবেটিস, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, ও উচ্চমাত্রায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মতো কারণ উল্লেখযোগ্য।
কিডনিতে পাথরের সাধারণ লক্ষণ হলো :
ক। তীব্র কোমর বা পিঠে ব্যথা
খ। প্রস্রাবে রক্ত দেখা
গ। বমি বা বমি বমি ভাব
ঘ। জ্বর এবং ঠান্ডা লাগা
ঙ। প্রস্রাবে তীব্র দুর্গন্ধ
এই ধরনের সমস্যায় বড় পাথর ওষুধ বা অস্ত্রোপচার ছাড়া গলানো বেশ কঠিন হতে পারে। তবে প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া প্রতিকার পাথর ছোট হলে তা নিরাময়ে সহায়ক হতে পারে।
কিডনির পাথর নিরাময়ে ঘরোয়া প্রতিকার :
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ মিহির খাত্রির পরামর্শ অনুযায়ী, কিছু ঘরোয়া উপায়ে কিডনির পাথর নিরাময় সম্ভব। বিশেষ করে কিছু বিশেষ খাবার ও পানীয় কিডনিতে জমে থাকা পাথর ভেঙে গলাতে সহায়তা করতে পারে।
১. বড় লেবুর রস :
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় “বড় লেবু” (সিট্রন বা সাইট্রাস মেডিকা) একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বড় লেবুর রস প্রতিদিন খালি পেটে ২০ মিলিলিটার পান করা কিডনির পাথর গলাতে সাহায্য করে। এটি ৩-৪ সপ্তাহের বেশি খাওয়া উচিত নয়, কারণ অতিরিক্ত সেবন পেটের সমস্যার কারণ হতে পারে।
২. পর্যাপ্ত পানি পান :
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা কিডনির পাথর গলাতে সহায়ক। এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে পাথরগুলোকে শরীর থেকে বের করতে সাহায্য করে এবং নতুন পাথর গঠনের ঝুঁকি কমায়।
৩. ডালের পানি বা পাতলা ডাল :
ডালের পানি বা পাতলা ডাল খাওয়া কিডনি থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সহায়তা করে এবং এটি মূত্রতন্ত্র পরিষ্কার রাখে।
৪. খাদ্যাভ্যাসের নিয়ন্ত্রণ :
লবণ কমিয়ে দিন: অতিরিক্ত লবণ কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি বাড়ায়, তাই এর পরিমাণ কমিয়ে রাখা উচিত।
অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন: অ্যালকোহল কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা পাথরের সমস্যা বাড়াতে পারে।
৫. নিয়মিত প্রস্রাব করুন :
দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখার অভ্যাস কিডনিতে পাথর গঠনের সম্ভাবনা বাড়ায়। তাই নিয়মিত প্রস্রাব করা উচিত এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা উচিত।
কিডনিতে পাথর থেকে রক্ষার উপায় :
১। পর্যাপ্ত পানি পান করা।
২। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখা।
৩। নিয়মিত ব্যায়াম করা।
৪। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ।
এভাবে ঘরোয়া প্রতিকার ও সঠিক জীবনধারা অনুসরণ করে কিডনির পাথর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে বড় পাথরের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।