নিজস্ব প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষকরা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মাহাবুবুল করিম ও প্রধান সহকারী মোরশেদ আলমের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম ও প্রধান সহকারী মোরশেদ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।
শুক্রবার (১০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে শিক্ষক পরিষদের সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আজিম উদ্দিন ও সম্পাদক ড. আবু সিনা ছৈয়দ তারেক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর অপসারণের দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শিক্ষকদের দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে অধ্যক্ষ কলেজে আসছেন না।
তার অনুপস্থিতে প্রশাসনিক কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কলেজ খোলার প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের খোঁজ করতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে প্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ ও বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন।
তারা অধ্যক্ষের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি, আর্থিক অনিয়ম, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ, তুচ্ছ কারণে কয়েকজন দরিদ্র কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা, শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্টকরাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
শিক্ষকদের সঙ্গে অধ্যক্ষ যে সব অন্যায় অবিচার ও বিমাতাসুলভ আচরণ করেছেন তাও উল্লেখ করা হয়।
শিক্ষকরা অধ্যক্ষের অপসারণ ও আর্থিক অনিয়মের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
অধ্যক্ষকে অপসারণ করে দ্রুত নতুন অধ্যক্ষ পদায়ন করে নিয়মতান্ত্রিক কলেজের পাঠদান ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি পেশ করেন।
এছাড়াও তারা কলেজের প্রধান সহকারী মোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে তার অপসারণ ও শাস্তি দাবি করে। একই দাবি জানায় কলেজের কর্মচারীরাও।
শিক্ষক পরিষদের সভাপতি উপাধ্যক্ষ ড. মো. আজিম উদ্দিন বলেন, সভায় অধ্যক্ষ ও প্রধান সহকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসময় শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
প্রধান সহকারী মোরশেদ আলম বলেন, অধ্যক্ষের সিদ্ধান্তের বাইরে আমিসহ কারোরই কোনো কাজ করার সুযোগ ছিল না। উনার নির্দেশেই আমাকে কাজ করতে হতো। তার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার কারণেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ অধ্যক্ষ মাহাবুবুল করিম বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন হয়েছে। আমাকেও বদলি করে দেবে। এখন অন্য শিক্ষকরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে আমাকে অপমানিত করতে চাচ্ছেন। হয়ত শিক্ষকদের মধ্যে কেউ অধ্যক্ষের চেয়ারে বসতে চান। এতে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু আমাকে অপমান করার জন্য তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না। আমাকে ছাড়া তারা কীভাবে সভা ডাকে তাও বোধগম্য হচ্ছে না। অনিয়মের ঘটনায় কয়েকজন কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছি। এর মধ্যে কয়েকজনকে চাকরি ফিরিয়েও দিয়েছি। ’