নিজস্ব প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিন চরবংশী ও উত্তর চরআবাবিল এ তিন ইউনিয়নের সীমানায় মেঘনায় পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে অনেক দিকে দেখা দিয়েছে ভাঙন। আগ্রাসী মেঘনা চোখের পলকেই যেন সবকিছু ভেঙ্গে করে দিয়েছে বিলীন। এতে নদীগর্ভে ভিটেমাটি হারিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।
শনিবার(১৩ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নদী ভাঙন এতই তীব্র যে নদীর পাড়ের মানুষ তাদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সময় পর্যন্ত পাননা। মেঘনায় পানি দক্ষিন চরবংশী ইউপির মিয়ারহাট (রাহুল ঘাট) পয়েন্টে বিপদ সীমার ৮৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় ইউনিয়নের কাঠমা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার উত্তর চরবংশী ও দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া, মোল্লারহাট, চরইন্দ্রুরিয়া,পানিরঘাট, চরঘাসিয়া, জালিয়ার চর গ্রামের দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসিল জমি এবং আলতাফ মাষ্টার ঘাট এলাকা মেঘনা নদীগর্ভে বিলীন হয়। ভাঙনে চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন কয়েক হাজার পরিবার।
সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, অর্ধশত বাড়িঘর ও শত শত হেক্টর ফসিল জমি যেকোনো সময় মেঘনার কড়াল গ্রাসে পড়তে পারে। ওই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ ঘরবাড়ি-জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
উত্তর চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নে বেশিভাগ মানুষ খেটে খাওয়া। তারা ত্রাণ বা অন্য কোনো সাহায্য চান না। তারা চান নদী ভাঙন রোধে একটি স্থায়ী সমাধান ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ; যেন তারা নিজ বাড়িতে বসবাস করে নিজের জমি চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন।।
দক্ষিন চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সালেহ মিন্টু ফরায়েজি বলেন, আমার ইউনিয়নের মিয়ারহাট, রাহুল ঘাট, পানিরঘাট, হাজিমারা, চরকাছিয়া গ্রামে মেঘনার ভাঙন চলছে। হুমকির মুখে পড়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানেন। এ ছাড়া নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রামে ঘরবাড়ি ও জমি ।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুখ আহম্মেদ বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে প্রকল্পের জন্য স্থানীয় সাংসদ এডঃ নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এর মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের অর্থ বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হবে। জিও ব্যাগ ফেললে অনেক স্থাপনা রক্ষা সম্ভব। এই এলাকাটির ভাঙন ঠেকাতে প্রকল্প হাতে নিবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) আসনের এমপি অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, রায়পুরের হাজিমারা থেকে চাঁদপুরের হাইমচর সীমানা পর্যন্ত তীর সংরক্ষণ ও ভাঙন রোধে স্থানীয়দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দেয়া হয়। প্রকল্প গ্রহণের জন্য গত বছর পানিসম্পদ মন্ত্রীকে ডিও লেটার দেয়া হয়েছে।