নিজস্ব প্রতিনিধি :
ঘড়ির কাঁটা ১০টা বেজে কিছু সময়। আদালত পাড়ায় মানুষের আনাগোনাও বাড়ছে, বাড়ছে কর্মব্যস্ততাও। হঠাৎ কালো গাউন পরিহিত ও কোর্ট পরিহিত দুইজন এক যুবককে টেনেহেঁচড়ে মারধর করতে করতে নিয়ে যাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখার পর কেউ কেউ থামাতে গিয়েও ব্যর্থ হন।
পরে জানা যায় বড় বোনের কাবিনের টাকা আইনজীবি না দিয়ে গড়িমসি করছেন। মারধরের শিকার ওই যুবকের স্বজনদের দাবি, ওই আইনজীবি কাবিনের টাকা আত্মসাদ করার জন্য মোবাইল ফোন বন্ধ ও বাদির ব্যবহৃত নাম্বার ব্লক করে দিয়েছেন। ঘটনাটি লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণের।
গেলো সোমবার (২৫মার্চ) বড় বোনের দেনমোহরের টাকা চাইতে গিয়ে ফয়সাল নামের এক যুবক আবদুস সামাদ আজাদ হিরণ নামের এক আইনজীবির হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন।
এঘটনায় ভুক্তভোগীর বোন শিমু আক্তার জেলা আইনজীবি সমিতির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আবদুস সামাদ আজাদ হিরণ লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের আইনজীবি ও ভুক্তভোগী ফয়সাল হোসেনের বড় বোন শিমু আক্তারের মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবি।
শিমু আক্তার ও ফয়সাল হোসেন জানান, শিমু দেনমোহরের প্রাপ্য টাকা পেতে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত ও উভয়পক্ষের আইনজীবির মধ্যস্থতায় দেনমোহরের দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। কয়েক ধাপে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেয়া হলেও বাকি ৬০ হাজার টাকা দিতে বাদির আইনজীবি আবদুস সামাদ আজাদ হিরণ গড়িমসি করেন।
পরে ঘটনার দিন বাদির ভাই ফয়সাল হোসেনকে আইনজীবি হিরণের কাছে থাকা বাকি ৬০ হাজার টাকা নিতে বলেন।
এসময় ফয়সাল ঘটনাস্থলে আসলে হিরণসহ কয়েকজন আইনজীবি একত্র হয়ে ফয়সালকে জামার কলার ধরে টেনে হেঁচড়ে আইনজীবি সমিতির শৌচাগারে প্রায় আধা ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে আদালতের আরেক আইনজীবি ফিরোজ আলম ওই যুবককে উদ্ধার করে।
মামলার বিবাদি শিমু’র স্বামী রিয়াদ জানান, বাদিকে দিতে তিনি কয়েক ধাপে ২ লাখ বিশ হাজার টাকা আইনজীবির কাছে দিয়েছেন। পরে বাদির উকিলকে দেয়ার জন্য আরো পাঁচ হাজার টাকাও দেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতে সেবা নিতে এসে বিচারপ্রার্থীরা এর আগেও অনেকবার হেনস্থার শিকার হয়েছেন, পড়েছেন আইনজীবিদের রোষানলেও। এতে ন্যায় বিচারতো দূরে থাক বাদি-বিবাদী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে মনে করেন সচেতন মহল।