নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরা দিতে গেলে বিএনপির ১৮ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আমলী আদালত-৪ এর বিচারক মো. এমদাদ এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত সাত জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাশকতার মামলায় নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওবায়দুল হক চেয়ারম্যান, পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব,
সেনবাগ পৌরসভার কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন বাবুল, বিএনপি নেতা ভিপি মফিজুল ইসলাম, ভিপি ওমর, সেনবাগ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়ালিদ আদনানসহ ১৮ জন নেতাকর্মী হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে হাজিরা দিতে আসেন।
তারা আগাম জামিনের আবেদন করলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আমলী আদালত-৪ এর বিচারক মো. এমদাদ তা নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট থেকে আসামিদের আগাম জামিন ছিল। আজ তারা হাজিরা দিতে আসে।
কিন্তু বিচারক জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার সব রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।
এদিকে ১৮ জন নেতাকর্মীর জামিন নামঞ্জুর এবং কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন আরও বেশি বেপরোয়াও কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ গণতন্ত্রমনা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নানান কায়দায় দমন-পীড়নের মাত্রা বৃদ্ধি করা করেছে। মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে বিরোধী নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে এক জুলুমের সংস্কৃতি তৈরি করা হয়েছে। উপরে উল্লেখিত নেতাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা আওয়ামী মাত্রাতিরিক্ত জুলুমেরই ধারাবাহিকতা। বর্তমানে দেশে আইনের শাসন ও সুশাসন নেই বলেই গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণরত নেতাকর্মীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশে এক সর্বগ্রাসী অরাজকতা বিদ্যমান রয়েছে। দুঃশাসন প্রলম্বিত করার জন্যই দখলদার আওয়ামী সরকার শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই ভয়াল পরিবেশ তৈরী করেছে।’
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. তাইফুল ইসলাম টিপুর স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল সারাদেশে প্রতিনিয়ত সরকারের মদদে বিরোধী নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারাবন্দী করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং উল্লিখিত নেতাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান তিনি।