নোয়াখালী প্রতিনিধি :
নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনে নির্বাচন পরবর্তী শতাধিক কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও পিটিয়ে আহত, বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বোমা হামলা, ভাংচুর ও তালা দেয়ার প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ট্রাক প্রতীকের পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট মো. শিহাব উদ্দিন শাহিন। এ সময় তিনি ৪২জন প্রিসাইডিং কর্মকতার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনেন ।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জেলা শহর মাইজদীর নিজ বাসভবন চেয়ারম্যান পার্কে এই সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলন তিনি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত থাকার কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি। দল সিদ্ধান্ত না দিলে আমি প্রার্থী হতাম না। নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকেই নৌকার প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরীর নির্দেশে তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার ট্রাক প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের হুমকি, পোস্টার-লিফলেট ছিঁড়ে ফেলা, অফিস ভাংচুর, হামলা, ভোট কেন্দ্রে যেতে বাঁধা ও আমার কর্মী-সমর্থকের অভিভাবকদের হুমকি দিয়ে আসছিল।
এমন কি ভোটের আগের রাতে প্রত্যেক ভোট কেন্দ্রের আশপাশে বোম বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ভোটারদের মাঝে আতংক সৃষ্টি করে।
এডভোকেট মো. শিহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, ভোটের দিন প্রায় ৪২জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নৌকার প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরীর পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে লাগাতার পক্ষপাতমুলক দায়িত্ব পালন করেছেন।
ওইদিন সকাল ১১ টার পর থেকে আমার পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে জোরপুর্বক বের করে দেয়া হয়। এরপর থেকে ট্রাক প্রতীকের কর্মী সুবর্ণচরের মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খুরশিদ হাজারী, চরক্লার্কের হানিফ মেম্বার, চর ওয়াপদা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা সবুর খান, সুবর্ণচরের সাহাব উদ্দিন মেম্বার, জুয়েল, মো. হাসান, সাহাব উদ্দিন, মোবারক হোসেন, সামছুদ্দিন, সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জাহেদুল ইসলাম পারভেজ, ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিমা আক্তার খুকি, ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা ফারুক, ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মাহমুদুর নবী রায়হান, ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন, ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর ইসলাম কালাম, সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম ও তার স্ত্রী, কালাদরাপ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা বিডিবি শাহ আলম, ইউনিয়ন ছাত্র লীগের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হোসেন, ব্যবসায়ী আবু তাহের ও তার স্ত্রী, দাদপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী ও ছেলে, যুবলীগ নেতা শামীম, খলিল, সমর্থক সেলিম, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা নুরুল আমিন’সহ প্রায় শতাধিক কর্মী-সমর্থককে মারধর ও পিটিয়ে আহত, তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বোমা হামলা, ভাংচুর, লুটপাট চালিয়েছে জয়ী প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরীর সন্ত্রাসীরা।
তারা অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়েছে, আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘর থেকে বের হতে দিচ্ছেন না। এভাবে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা অব্যাহত থাকলে তারা দল বিমুখ হওয়াসহ দল থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের এ নেতা। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
তিন আরো বলেন, খরস্রোতা নদীকে খনিকের কিছু বাঁধ দিয়ে হয়তো বা নদীর গতিপথকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু কখনোই ওই নদীর প্রভাহকে চিরতরে থামিয়ে দেওয়া যায়না।
আমিও রাজনীতি থেকে থেমে যাবো না। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের মাতৃতুল্য নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসনিার নেতৃত্বে আমার গতিপথ অব্যাহত রাখবো। জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তপুর্বক বিচার দাবি করেন শাহিন।